মৌলভীবাজার ১২:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
Logo বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস Logo অশ্লীল ভিডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিস্তার: যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় এবং তার ক্ষতিকর প্রভাব Logo হাসিনা-রেহানা-টিউলিপসহ ৫৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা Logo মৌলভীবাজারে এড. সুজন মিয়া মিসকিলিংয়ের শিকার; পুলিশের চাঞ্চল্যকর তথ্য; গ্রেপ্তার ৫ Logo সাংবাদিকের জমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার Logo বিনিয়োগ সম্মেলন উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা Logo মৌলভীবাজারে মাদকবিরোধী অভিযান: ১ কেজি ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক ৬ Logo সংবিধান ছাড়া যত সংস্কার আছে করেন : বিএনপি নেতা নাসের Logo দেশব্যাপী সরকারি ফার্মেসি চালু করছে সরকার, ওষুধ মিলবে এক তৃতীয়াংশ দামে Logo এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ১০ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত কোচিং বন্ধ থাকবে

রাজনগরে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

নিহত আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের রাজনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ওরফে ছানা (৫০) নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারে সংঘর্ষটি শুরু হয় এবং দুপুর ২টা পর্যন্ত চলতে থাকে।

সিরাজুল ইসলাম পাঁচগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর মধুর বাজারে মহেশ দাসের দোকান লুট করা হয়। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা ছিল। শুক্রবার সকালে লুটের অভিযোগে রক্তা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কেওলা গ্রামের ছুনু মিয়ার কথা-কাটাকাটি হয়। এর পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কেওলা, সারমপুর এবং রক্তা গ্রামের লোকজনের মধ্যে।

রক্তা গ্রামের বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতানের নেতৃত্বে এক পক্ষ এবং কেওলা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান মিয়া ও চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে অপর পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র ছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি বিনিময় হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা আড়াইটার দিকে সেখানে তাঁর মৃত্যু ঘটে। আহত ব্যক্তিদের রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও সিলেটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে মৌলভীবাজার ও রাজনগরের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আহমেদ ফয়সল জামান জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৫২ জন আহত চিকিৎসা নিচ্ছেন, এর মধ্যে ৭ জন ভর্তি আছেন। চেয়ারম্যান গুলিবিদ্ধ ছিলেন এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

নিহত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের চাচাতো ভাই দেওয়ান মিয়া অভিযোগ করেছেন যে, প্রতিপক্ষ তাঁর ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে এবং তাঁদের সব দোকান লুটপাট করেছে। অপরদিকে, পিন্টু সুলতান দাবি করেছেন, তাঁর আইসক্রিম কারখানায় কাজ করার সময় সারমপুর ও কেওলার লোকজন মধুর বাজারে হামলা চালিয়েছে, যা তাঁরা প্রতিহত করেছেন।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা জানিয়েছেন, পূর্বের দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি এবং গোলাগুলি হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী অবস্থান করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস

রাজনগরে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

আপডেট সময় ০৮:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪

মৌলভীবাজারের রাজনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ওরফে ছানা (৫০) নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারে সংঘর্ষটি শুরু হয় এবং দুপুর ২টা পর্যন্ত চলতে থাকে।

সিরাজুল ইসলাম পাঁচগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর মধুর বাজারে মহেশ দাসের দোকান লুট করা হয়। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা ছিল। শুক্রবার সকালে লুটের অভিযোগে রক্তা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কেওলা গ্রামের ছুনু মিয়ার কথা-কাটাকাটি হয়। এর পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কেওলা, সারমপুর এবং রক্তা গ্রামের লোকজনের মধ্যে।

রক্তা গ্রামের বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতানের নেতৃত্বে এক পক্ষ এবং কেওলা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান মিয়া ও চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে অপর পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র ছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি বিনিময় হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা আড়াইটার দিকে সেখানে তাঁর মৃত্যু ঘটে। আহত ব্যক্তিদের রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও সিলেটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে মৌলভীবাজার ও রাজনগরের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আহমেদ ফয়সল জামান জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৫২ জন আহত চিকিৎসা নিচ্ছেন, এর মধ্যে ৭ জন ভর্তি আছেন। চেয়ারম্যান গুলিবিদ্ধ ছিলেন এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

নিহত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের চাচাতো ভাই দেওয়ান মিয়া অভিযোগ করেছেন যে, প্রতিপক্ষ তাঁর ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে এবং তাঁদের সব দোকান লুটপাট করেছে। অপরদিকে, পিন্টু সুলতান দাবি করেছেন, তাঁর আইসক্রিম কারখানায় কাজ করার সময় সারমপুর ও কেওলার লোকজন মধুর বাজারে হামলা চালিয়েছে, যা তাঁরা প্রতিহত করেছেন।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা জানিয়েছেন, পূর্বের দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি এবং গোলাগুলি হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী অবস্থান করছে।