ঢাকা ১০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

কুলাউড়ায় গৃহবধূ নির্যাতনের হোতা ‘পাষণ্ড শ্বশুর’ গ্রেফতার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে শশুর শফিক মিয়া (৬৩) ও স্বামী আব্দুস সালাম (৩২) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল (১৭ এপ্রিল) সোমবার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে কুলাউড়ায় এক গৃহবধূ নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় ২৪ ঘন্টায় মধ্যেই নির্যাতিত গৃহবধূর শশুর শফিক মিয়া (৬৩)কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালাম (৩২) কে গ্রেফতার পূর্বক আজ সকালে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।

আজ (১৮ এপ্রিল) সারাদিন ঘটনার মূল হোতা ভিকটিমের শ্বশুর মো. শফিক মিয়া(৬৩) কে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আজ বিকেল সাডে ৫ টায় মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই হারুনুর রশিদ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সের সহায়তায় আসামী শফিক মিয়াকে মৌলভীবাজার সদরের একাটুনা গ্রামের তার মেয়ের জামাই শামসুল মিয়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন।

গতকাল বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা এবং সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, কুলাউড়া থানার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে গৃহবধূর শ্বশুর মো. সফিক মিয়া (৬৩) তার পুত্রবধুকে অশ্লীল গালি-গালাজ করে মারধর করতে করতে একটি বাড়ির উঠান থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে।

পরবর্তীতে ভিকটিমের বড়ভাই বাবুল মিয়া এই ঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি জানান, গত প্রায় চার বছর আগে ভিকটিম রুজিনা বেগম-কে সুলতানপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে আব্দুস সালামের নিকট বিয়ে দেয়া হয়।

বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানেরও জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালাম যৌতুকের জন্য ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতে থাকে। ভিকটিমের পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারনে যৌতুকের দাবী পূরন করতে পারেনি

ভিকটিমের ভাই বাবুল মিয়া জানান, গত (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টায় সুলতানপুর ভিকটিমের শুরুর বাড়িতে ইফতারের শরবতের প্যাকেট কাটা-কে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সাথে ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালাম ও তার দেবর রুমান মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভিকটিম রুজিনা বেগম-কে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এলোপাতাড়ি মারধর করে। এর পরের দিন সকাল অনুমান ০৬:৩০ ঘটিকায় ভিকটিমকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক বাবদ ০১ (এক) লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে। ভিকটিম যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে এলাপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। ভিকটিম প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশী জ্যোৎস্না বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নিলে তার শ্বশুর এবং স্বামী জ্যোত্স্না বেগমের বাড়িতে গিয়ে ভিকটিমকে অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ করে ভুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে টেনে-হিচড়ে তার শশুর বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ খরব পেয়ে ভিকটিমের ভাই এবং আত্মীয়স্বজন ভিকটিমকে উদ্ধার করতে গেলে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাদেরকে গালি-গালাজ করে তাদেরকে বাসা থেকে বের করে দেয়।

পরবর্তীতে কুলাউড়া থানার এসআই(নিরস্ত্র) হারুনুর রশিদ সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

এর আগে রাত আড়াই টায় সুলতানপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালামকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুস সালামকে আজ সকালে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুলাউড়ায় গৃহবধূ নির্যাতনের হোতা ‘পাষণ্ড শ্বশুর’ গ্রেফতার

আপডেট সময় ০৪:৩২:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে শশুর শফিক মিয়া (৬৩) ও স্বামী আব্দুস সালাম (৩২) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল (১৭ এপ্রিল) সোমবার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে কুলাউড়ায় এক গৃহবধূ নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় ২৪ ঘন্টায় মধ্যেই নির্যাতিত গৃহবধূর শশুর শফিক মিয়া (৬৩)কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালাম (৩২) কে গ্রেফতার পূর্বক আজ সকালে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।

আজ (১৮ এপ্রিল) সারাদিন ঘটনার মূল হোতা ভিকটিমের শ্বশুর মো. শফিক মিয়া(৬৩) কে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আজ বিকেল সাডে ৫ টায় মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই হারুনুর রশিদ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সের সহায়তায় আসামী শফিক মিয়াকে মৌলভীবাজার সদরের একাটুনা গ্রামের তার মেয়ের জামাই শামসুল মিয়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন।

গতকাল বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা এবং সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, কুলাউড়া থানার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে গৃহবধূর শ্বশুর মো. সফিক মিয়া (৬৩) তার পুত্রবধুকে অশ্লীল গালি-গালাজ করে মারধর করতে করতে একটি বাড়ির উঠান থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে।

পরবর্তীতে ভিকটিমের বড়ভাই বাবুল মিয়া এই ঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি জানান, গত প্রায় চার বছর আগে ভিকটিম রুজিনা বেগম-কে সুলতানপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে আব্দুস সালামের নিকট বিয়ে দেয়া হয়।

বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানেরও জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালাম যৌতুকের জন্য ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতে থাকে। ভিকটিমের পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারনে যৌতুকের দাবী পূরন করতে পারেনি

ভিকটিমের ভাই বাবুল মিয়া জানান, গত (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টায় সুলতানপুর ভিকটিমের শুরুর বাড়িতে ইফতারের শরবতের প্যাকেট কাটা-কে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সাথে ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালাম ও তার দেবর রুমান মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভিকটিম রুজিনা বেগম-কে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এলোপাতাড়ি মারধর করে। এর পরের দিন সকাল অনুমান ০৬:৩০ ঘটিকায় ভিকটিমকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক বাবদ ০১ (এক) লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে। ভিকটিম যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে এলাপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। ভিকটিম প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশী জ্যোৎস্না বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নিলে তার শ্বশুর এবং স্বামী জ্যোত্স্না বেগমের বাড়িতে গিয়ে ভিকটিমকে অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ করে ভুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে টেনে-হিচড়ে তার শশুর বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ খরব পেয়ে ভিকটিমের ভাই এবং আত্মীয়স্বজন ভিকটিমকে উদ্ধার করতে গেলে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাদেরকে গালি-গালাজ করে তাদেরকে বাসা থেকে বের করে দেয়।

পরবর্তীতে কুলাউড়া থানার এসআই(নিরস্ত্র) হারুনুর রশিদ সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

এর আগে রাত আড়াই টায় সুলতানপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমের স্বামী আব্দুস সালামকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুস সালামকে আজ সকালে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।