প্রায়শই বেফাঁস মন্তব্যের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন বলিউড অভিনেত্রী ও হিমাচল প্রদেশের মান্ডির বিজেপি সংসদ সদস্য কঙ্গনা রানাউত। এবার তিনি বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কঙ্গনার দাবি, যদি প্রধানমন্ত্রী মোদি কৃষক আন্দোলন নিয়ে কঠোর না হতেন, তাহলে ভারতের অবস্থাও বাংলাদেশের মতো হতে পারত।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। কঙ্গনা এই প্রসঙ্গ তুলে এক্স-এ (সাবেক টুইটার) শেয়ার করা এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনকে কটাক্ষ করেছেন।
কঙ্গনা তার ভিডিও বার্তায় বলেন, “যেটা বাংলাদেশে ঘটেছে, সেটা এদেশেও হতে পারত, যদি আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব কঠোর পদক্ষেপ না নিতেন। কৃষক আন্দোলনের সময়ও অনেক মৃতদেহ পাওয়া গেছে, ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। আর যখন কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হলো, গোটা দেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল। কৃষকরাও ভাবেননি যে, সত্যিই এই আইন প্রত্যাহার করা হবে। এটা ছিল একটি বিশাল পরিকল্পনা, ঠিক যেমনটা বাংলাদেশে ঘটেছে।”
কঙ্গনা আরও বলেন, “কিছু কৃষক আন্দোলনের পরেও নিজেদের প্রতিবাদ চালিয়ে গেছেন। তবে এমন আন্দোলনের পেছনে আসল কারিগর কারা, সেটি ভাবুন। এটা আসলে আমেরিকার ষড়যন্ত্র। এ ধরনের বিদেশি শক্তি আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিছু লোক শুধু নিজেদের স্বার্থে এসবের সাথে যুক্ত থাকে, দেশের অবস্থা তারা ভাবেন না।”
এই মন্তব্যের পর তার নিজ দলের মধ্যেই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। পাঞ্জাবের সিনিয়র বিজেপি নেতা হারজিৎ গারেওয়াল কঙ্গনাকে এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কৃষকদের বিষয়ে মন্তব্য করা কঙ্গনার দায়িত্ব নয়। তার এসব মন্তব্য ব্যক্তিগত এবং আমাদের দলের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপি সবসময় কৃষক বান্ধব। বিরোধী দলগুলো আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, এবং কঙ্গনার এই মন্তব্য সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।”
এর আগেও কঙ্গনা বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। গত জুন মাসে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে একজন কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কনস্টেবল তাকে চড় মারেন। কনস্টেবলের দাবি, কঙ্গনার ‘কৃষকদের অসম্মান’ করার মন্তব্যের জন্য তিনি এমনটা করেছিলেন।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে কঙ্গনা তার এক্স অ্যাকাউন্টে এক বিতর্কিত পোস্টে দাবি করেছিলেন, এক বৃদ্ধা নারী তাকে ১০০ রুপির বিনিময়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই মন্তব্যও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।