বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষেরা তীব্র জলাবদ্ধতা, অনিরাপদ পানি এবং খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন, যা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কিছু সাধারণ রোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং এ বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।
সম্ভাব্য রোগসমূহ:
- ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগ:
- বন্যার পানি সাধারণত দূষিত থাকে, যা পানিবাহিত রোগের (যেমন ডায়রিয়া, কলেরা) ঝুঁকি বাড়ায়।
- টায়ফয়েড ও হেপাটাইটিস এ:
- দূষিত খাদ্য ও পানি থেকে এসব রোগ হতে পারে।
- ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া:
- জলাবদ্ধ এলাকায় মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়, যা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ায়।
- ত্বকের রোগ:
- দীর্ঘ সময় পানিতে থাকলে ত্বকে ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে।
- শ্বাসকষ্টজনিত রোগ:
- ভেজা ও আর্দ্র পরিবেশে ঠান্ডা, সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি থাকে।
করণীয়:
- পরিষ্কার পানি ব্যবহার:
- সম্ভব হলে বোতলজাত বা ফুটানো পানি পান করুন। বিকল্প হিসেবে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:
- হাত সবসময় সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। বিশেষ করে খাদ্য গ্রহণের আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পর।
- মশার থেকে সুরক্ষা:
- মশারি ব্যবহার করুন এবং মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশা প্রতিরোধক লোশন বা স্প্রে ব্যবহার করুন।
- পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ:
- তাজা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের চেষ্টা করুন। অপরিচ্ছন্ন বা দূষিত খাদ্য পরিহার করুন।
- ত্বকের যত্ন:
- পানি থেকে উঠে আসার পর শরীর ভালোভাবে মুছে ফেলুন এবং শুকনো কাপড় পরিধান করুন। ত্বকের কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষার গুরুত্ব:
- যেকোনো ধরনের অসুস্থতা বা উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করুন। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালীন নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।
- স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহায়তা:
- এলাকার নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে যোগাযোগ রাখুন এবং তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
বিশেষ পরামর্শ:
বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন। তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, ওষুধ এবং মশারি সরবরাহ করতে সহায়তা করুন। বন্যার এই সংকটময় মুহূর্তে আমাদের সকলের দায়িত্ব দুর্যোগ মোকাবিলায় একে অপরের পাশে থাকা।
মৌলভীবাজারে আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন: পানিবন্দি লক্ষ লক্ষ মানুষ , বন্ধ সড়ক যোগাযোগ