আগামীর বাংলাদেশ বিষাদের নয়, উৎসবমুখর হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মোঃ সিরাজ উদ্দিন মিয়া। তিনি বলেছেন, “আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ৫ আগস্টের পর জাতির এক ক্লান্তিলগ্নে দেশ ও জাতির হাল ধরেছেন। তিনি সব সময় বলেন, এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চান, যেখানে দেশের মানুষ হাসিমুখে থাকবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে উৎসবমুখর; দেশের মানুষ সর্বদা উৎসব ও আনন্দে থাকবে।”
শুক্রবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “উৎসবমুখর বাংলাদেশের জন্য এই আয়োজন একটি সূচনা হতে পারে। কারণ, শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজারের বৈচিত্র্য প্রশংসনীয়। এই বৈচিত্র্য নিয়েই আমাদের বসবাস করতে হবে। আমাদের নানা পরিচয় আছে, সংস্কৃতি ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আমরা একই ভূখণ্ডের বাসিন্দা। শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যের মধ্যকার ঐক্য সম্ভবত বাংলাদেশের অন্য কোথাও নেই। এটাই শ্রীমঙ্গলের বিশেষত্ব।”
মুখ্য সচিব বলেন, “এখানে প্রবেশের সময় বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের হাসিমাখা মুখ দেখে বিশ্বাস হয়, এই হাসিমুখ চিরস্থায়ী হবে। শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট বিভাগ পর্যটনের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এখানে পাহাড়, হাওর, জলাভূমি, বৃক্ষরাজি, বন, চা বাগানসহ অনেক বৈচিত্র্যের সমাহার আছে, যা বাংলাদেশের অন্য অঞ্চলে নেই। এখানকার প্রকৃতি অপূর্ব সাজে সজ্জিত। প্রকৃতি ও মানুষের বৈচিত্র্যকে মেলবন্ধন ঘটাতে পারলে পর্যটনের জন্য অপার সম্ভাবনা তৈরি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড হারমোনি উৎসব আয়োজনের জন্য শ্রীমঙ্গলকে বেছে নেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত। এখানকার প্রকৃতি ও মানুষের বৈচিত্র্যের মেলবন্ধন পর্যটন বিকাশে সহায়ক হবে। স্থানীয় প্রায় ২৩টি নৃ-গোষ্ঠীর মানুষকে একত্রিত করার মাধ্যমে ইকো ও কমিউনিটি ট্যুরিজম গড়ে তোলা সম্ভব। তাদের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে এই অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।”
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরীন জাহান, সিলেট বিভাগের কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মোঃ রেজা-উন-নবী এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
এছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়।
মেলায় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উপকরণ প্রদর্শনীসহ ঐতিহ্যবাহী খাবারের ৫০টি স্টল এবং প্রায় ২৬টি নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়। অতিথিরা তাদের বর্ণিল জীবনধারা ও সংস্কৃতির প্রথম দিনের আয়োজন উপভোগ করেন, যা রাত পর্যন্ত চলেছে। বৈচিত্র্যের এই মেলবন্ধনের উৎসবটি চলবে আগামী রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত।