বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী, যিনি সোনা মুজিব নামে পরিচিত, গত শনিবার রাতে উপজেলার খাইছড়া চা বাগানের দুর্গা মন্ডপসহ বিভিন্ন পূজা মন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বী চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। এতে তাদের ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সোনা মুজিবের বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সর্বত্র নিন্দার ঝড় ওঠে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, রোববার সকালে চা বাগানের তিনজন চেয়ারম্যান সাবেক পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মহসিন মিয়া মধুর বাসভবনে জড়ো হয়ে নিজেদের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান। তাদের দাবি, সোনা মুজিবের এই হুমকিতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মহসিন মিয়া মধু রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে তার নিজ বাসভবন ‘মহসিন নিবাসে’ এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সোনা মুজিবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। মহসিন মিয়া বলেন, “শ্রীমঙ্গল শান্তি ও সম্প্রীতির স্থান। এখানে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করার যে কোনো অপচেষ্টা আমরা কঠোর হাতে প্রতিহত করতে বদ্ধপরিকর।”
তিনি আরও বলেন, “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ গণতান্ত্রিক সমমনা দল সমর্থিত সরকার দেশে রয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “হাজী মুজিব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে উপজেলার রাজঘাট ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জী, কালিঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা এবং সাতগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান দেবাশীষ দেব রাখুর বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেন। এতে সনাতন ধর্মাবলম্বী ও চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক, ভীতি ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি বলেন, “হাজি মুজিবের এই কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। আমি একজন বিএনপির কর্মী হিসেবে হাজি মুজিবের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।”
এ বিষয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেন, “তোমরাও জানো আমরাও জানি, হাজি মুজিব রাজনীতির ‘র’ বুঝে না। সে কোনো রাজনীতিবিদ নয়, তার কথার কোনো স্টেশন নেই। পূজা মন্ডপে হাজি মুজিবের এমন ন্যাকারজনক বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি বিষয়টি নোট করেছি এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অবহিত করবো।”