শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিএনপি নেতা ও সাংবাদিক এম. ইদ্রিস আলীর ওপর পরিকল্পিতভাবে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে চালানো সন্ত্রাসী হামলা ও মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের চৌমুহনী চত্বরে স্থানীয় জনতা, সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা দাবি করেন, শুক্রবার রাতে এম ইদ্রিস আলীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত একটি হামলা, যার মাধ্যমে সাংবাদিক এম ইদ্রিস আলীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিক ইদ্রিস আলী তাঁর পরিবারের সদস্য (২য় স্ত্রী)-কে নিয়ে স্ত্রীর নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এমন সময় বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরে ‘পরকীয়ার মিথ্যা অপবাদ’ দিয়ে তাঁকে জোরপূর্বক ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন—সাবেক মেম্বার আহাদ মিয়া, মানবজমিন-এর শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি জামাল, আমার দেশ-এর শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি গোলাম কিবরিয়া জুয়েল, জনবাণী পত্রিকার প্রতিনিধি অন্তর মিয়া, ভোরের দর্পণ-এর জেলা প্রতিনিধি জাফর আহমেদসহ অন্যরা।
বক্তারা বলেন, “এই হামলা কেবল একজন সাংবাদিকের ওপর নয়, এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর একটি জঘন্য আক্রমণ। এম. ইদ্রিস আলী দীর্ঘদিন ধরে নির্ভীকভাবে সত্য প্রকাশ করে আসছেন। সেই কারণেই একটি পক্ষ তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করেছে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে। সাংবাদিক এম. ইদ্রিস আলীর ওপর হামলা মানে গণমাধ্যমের ওপর হামলা—আমরা কোনোভাবেই তা মেনে নেব না।”
বক্তারা তিনটি মূল দাবি উত্থাপন করেন, ১। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ২। আহত সাংবাদিক ইদ্রিস আলীর চিকিৎসা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা প্রদান। ৩। সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ আইন প্রণয়ন।
প্রতিবাদকারীরা আরও হুঁশিয়ারি দেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে স্থানীয় জনতা ও সাংবাদিক সমাজ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।”
এর আগে শুক্রবার রাতে শ্রীমঙ্গলের শংকরসেনা এলাকায় বিএনপি নেতা ও সাংবাদিক এম. ইদ্রিস আলীর কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তাঁকে এক নারীর সঙ্গে একই ঘরে দেখা যায়, যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করে।
এই ঘটনার পরদিনই ইদ্রিস আলীর সমর্থক, স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন।














