ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
ব্রেকিং নিউজ
Logo মৌলভীবাজার চেম্বার অব কর্মাসের পরিচালক ও হাসি ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী গ্রেফতার Logo শ্রীমঙ্গলে কৃষকদলের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo শ্রীমঙ্গলে দু’দিনব্যাপী তথ্য মেলা উদ্বোধন Logo মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা Logo নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারে ডায়াবেটিস দিবস পালিত Logo মৌলভীবাজারে রাস্তা পারাপারের সময় নারীর মৃত্যু Logo সিলেটে নিখোঁজের ৭ দিন পর শিশু মুনতাহার লাশ উদ্ধার Logo গাঁজা ও দেশীয় অস্ত্রসহ শ্রীমঙ্গলে ছয় যুবক আটক Logo “ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না”— জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান Logo মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র মহসিন মিয়া মধুর; প্রেস বিজ্ঞপ্তি

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া মধু বলেছেন, গতকাল ১৯ আগস্ট, দেশের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও ৩২৩টি পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করেছে। স্থানীয় সরকারের এই চার স্তরে উল্লেখিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৯৯ ভাগই ছিলেন পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত পৌর মেয়র হিসেবে এই সিদ্ধান্তকে আনন্দের সাথে স্বাগত জানাই।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের পূর্বে দেশে সব ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। শুরুতে বিএনপি বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তবে সেখানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক কারচুপি ও দখলের অভিযোগ ওঠে। ফলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে কার্যত জেলা ও উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার প্রায় সব শীর্ষ পদই আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের পৌর নির্বাচনে আমি যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মেয়র পদে নির্বাচন করেছি তা সকলেই অবগত আছেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবু হোসেনসহ এক ডজন কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী জনসভা করে আমাকে হুমকি দিয়েছিল। শ্রীমঙ্গলবাসী সহ দেশবাসী সকলের জানা আছে যে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগপন্থী সব উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, এমনকি ইউপি চেয়ারম্যানরাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষ হয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রচারণায় অংশ নেন।

শুধু তাই নয়, ২৫ নভেম্বর মধ্যরাতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বাসভবনে হামলা চালায়। সেই হামলায় আমার একমাত্র ছেলে মুরাদ হোসেন সুমন, ভাতিজা মোশারফ হোসেন রাজসহ পরিবারের সদস্যরা গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়, যার ফলে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারণায় বিভিন্ন বাঁধা, পুলিশি হয়রানি, হামলা এবং আমার কর্মীদের নিপীড়ন করা হয়েছিল। নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ আমাকে পরাজিত করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছিল, তবে শ্রীমঙ্গলের সাধারণ মানুষ সাহসিকতার সাথে সব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন।

আমি নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করার সুযোগ পেয়েছিল। সে সময় পৌরসভার ভেতরে মহসিন অডিটরিয়ামে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ, মহিলা দলের সমাবেশ, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, জন্মবার্ষিকী, এমনকি বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনীসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং দেশের প্রথম সারির পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

অনেকেই জানেন যে, ২০১১ সালে পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার আমাকে শপথ গ্রহণে বাধা প্রদান করেছিল। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে আমাকে শপথ গ্রহণ করতে দেয়া হয়। এর আগে, ২০০১ সালে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকায় আমি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিই। তবে তৎকালীন সময়ে বিএনপির অনেকেই আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা বা অন্য প্রতীক নিয়ে আমার বিপক্ষে কাজ করেছিলেন।

এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তুফানের মুখে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এই পতনের পর স্থানীয় সরকার অফিসগুলো থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থিত বিনা ভোটের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করার ফলে দেশের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার পথ বন্ধ হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই এবং আমি তাদের রাষ্ট্র সংস্কারের সকল পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।

মো. মহসিন মিয়া মধু
সাবেক মেয়র, শ্রীমঙ্গল পৌরসভা
সাবেক সভাপতি, শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি

জনপ্রিয় সংবাদ

মৌলভীবাজার চেম্বার অব কর্মাসের পরিচালক ও হাসি ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী গ্রেফতার

x

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র মহসিন মিয়া মধুর; প্রেস বিজ্ঞপ্তি

আপডেট সময় ১২:৩১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া মধু বলেছেন, গতকাল ১৯ আগস্ট, দেশের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও ৩২৩টি পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করেছে। স্থানীয় সরকারের এই চার স্তরে উল্লেখিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৯৯ ভাগই ছিলেন পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত পৌর মেয়র হিসেবে এই সিদ্ধান্তকে আনন্দের সাথে স্বাগত জানাই।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের পূর্বে দেশে সব ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। শুরুতে বিএনপি বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তবে সেখানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক কারচুপি ও দখলের অভিযোগ ওঠে। ফলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে কার্যত জেলা ও উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার প্রায় সব শীর্ষ পদই আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের পৌর নির্বাচনে আমি যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মেয়র পদে নির্বাচন করেছি তা সকলেই অবগত আছেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবু হোসেনসহ এক ডজন কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী জনসভা করে আমাকে হুমকি দিয়েছিল। শ্রীমঙ্গলবাসী সহ দেশবাসী সকলের জানা আছে যে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগপন্থী সব উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, এমনকি ইউপি চেয়ারম্যানরাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষ হয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রচারণায় অংশ নেন।

শুধু তাই নয়, ২৫ নভেম্বর মধ্যরাতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বাসভবনে হামলা চালায়। সেই হামলায় আমার একমাত্র ছেলে মুরাদ হোসেন সুমন, ভাতিজা মোশারফ হোসেন রাজসহ পরিবারের সদস্যরা গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়, যার ফলে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারণায় বিভিন্ন বাঁধা, পুলিশি হয়রানি, হামলা এবং আমার কর্মীদের নিপীড়ন করা হয়েছিল। নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ আমাকে পরাজিত করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছিল, তবে শ্রীমঙ্গলের সাধারণ মানুষ সাহসিকতার সাথে সব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন।

আমি নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করার সুযোগ পেয়েছিল। সে সময় পৌরসভার ভেতরে মহসিন অডিটরিয়ামে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ, মহিলা দলের সমাবেশ, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, জন্মবার্ষিকী, এমনকি বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনীসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং দেশের প্রথম সারির পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

অনেকেই জানেন যে, ২০১১ সালে পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার আমাকে শপথ গ্রহণে বাধা প্রদান করেছিল। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে আমাকে শপথ গ্রহণ করতে দেয়া হয়। এর আগে, ২০০১ সালে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকায় আমি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিই। তবে তৎকালীন সময়ে বিএনপির অনেকেই আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা বা অন্য প্রতীক নিয়ে আমার বিপক্ষে কাজ করেছিলেন।

এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তুফানের মুখে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এই পতনের পর স্থানীয় সরকার অফিসগুলো থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থিত বিনা ভোটের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করার ফলে দেশের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার পথ বন্ধ হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই এবং আমি তাদের রাষ্ট্র সংস্কারের সকল পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।

মো. মহসিন মিয়া মধু
সাবেক মেয়র, শ্রীমঙ্গল পৌরসভা
সাবেক সভাপতি, শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি