ঢাকা ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
ব্রেকিং নিউজ
Logo শ্রীমঙ্গলে দু’দিনব্যাপী তথ্য মেলায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য চেয়ে আবেদন ৮২৬, মাঠেই তথ্য পেলেন ৪৮১ জন Logo মৌলভীবাজার চেম্বার অব কর্মাসের পরিচালক ও হাসি ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী গ্রেফতার Logo শ্রীমঙ্গলে কৃষকদলের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo শ্রীমঙ্গলে দু’দিনব্যাপী তথ্য মেলা উদ্বোধন Logo মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা Logo নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারে ডায়াবেটিস দিবস পালিত Logo মৌলভীবাজারে রাস্তা পারাপারের সময় নারীর মৃত্যু Logo সিলেটে নিখোঁজের ৭ দিন পর শিশু মুনতাহার লাশ উদ্ধার Logo গাঁজা ও দেশীয় অস্ত্রসহ শ্রীমঙ্গলে ছয় যুবক আটক Logo “ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না”— জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান

৮ ঘন্টার মধ্যেই ফিল্মি স্টাইলে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা গ্রেফতার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ডলুছড়ায় লেবু বাগানের চাম্পালাল মুন্ডা হত্যাকাণ্ডের ৮ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বিশ্বনাথ তাঁতীকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।

গতকাল (১৪ মে) মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানাধীন পাত্রখলা চা বাগানের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাঁড়াসি অভিযান পরিচালনা করে বিশ্বনাথ তাঁতীকে গ্রেফতার করা হয়।

বাগান মালিক পক্ষ জানায়, ভিকটিম চাম্পা লাল মুন্ডা (৩৭) প্রায় ২/৩ বছর যাবৎ ডলুছড়ায় জনৈক দেববর্মার লেবু বাগানে কাজ করে আসছে। ঘাতক বিশ্বনাথ তাঁতীও ২ মাস যাবত এই বাগানে কাজ করে আসছিল।

ভিকটিম চাম্পা লাল মুন্ডা প্রতিদিন ভোর বেলা বাগানের লেবু বিক্রির জন্য ঠেলাগাড়ি করে শ্রীমঙ্গলে বাজারে নিয়ে যেত। গত (১৪ মে) ভোর বেলা ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা বাজারে না আসার কারনে জনৈক জয় কুমার দেববর্মা চাম্পালাল মুন্ডার মোবাইলে ফোন দেয়। ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা ফোন রিসিভ না করার কারণে লেবু বাগান মালিক জনক দেববর্মাসহ তার লোকজন বাগানের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে (১৪ মে) সকাল অনুমান সাড়ে ৬ ঘটিকার সময় লেবু বাগানের ভিতরে মাটির রাস্তায় গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় চাম্পালাল মুন্ডাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষনিক লেবু বাগান মালিক জনক দেববর্মাসহ তার লোকজন চাম্পালাল মুন্ডাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার পূর্বক চিকিৎসার জন্য শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (১৪ মে) সকাল সাড়ে ৮ ঘটিকার সময় চাম্পালাল মুন্ডা মৃত্যুবরণ করে।

এই ঘটনার সংবাদ পেয়ে মাননীয় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া মহোদয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব সুদর্শন কুমার রায় ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহিদুল হক মুন্সী এবং অফিসার ইনচার্জ, শ্রীমঙ্গল থানার সার্বিক দিক-নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই/রাকিবুল হাছান, এসআই/মো. রফিকুল ইসলাম, এসআই তীথংকর দাস এবং এসআই মো. জিয়াউর রহমানসহ একটি চৌকস দল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।

আটককৃত মূল হোতা

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ দ্রুত শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত দেহ ময়না তদন্তের নিমিত্তে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

ঘটনার দিনই পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মোঃ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে চৌকস দলটি ডলুছড়া লেবুর বাগানে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য যান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বাগানের আরেক শ্রমিক বিশ্বনাথ তাঁতীকে লেবু বাগানে পাওয়া না যাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে বিশ্বনাথ তাঁতীর বসত বাড়ীতে গেলে তার উঠানের বিভিন্ন জায়গায় রক্তের দাগ এবং তার বসত বাড়ীর সামনের রাস্তায়ও রক্তের দাগ দেখতে পায় পুলিশ । পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কমলগঞ্জ থানাধীন পাত্রখলা চা বাগানের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাঁড়াসি অভিযান চালিয়ে বিশ্বনাথ তাঁতীকে থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানান যে, গত (১৩ মে) রাত অনুমান সাড়ে ১১ ঘটিকার সময় ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডাকে বসত ঘরে তার স্ত্রীর পাশে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে সে রাগান্বিত হয়ে লাঠি দিয়ে চাম্পালাল মুন্ডার কপালে ও পিঠে একাধিক আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে চাম্পালাল মুন্ডা গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় লেবু বাগানের ভিতরের মাটির রাস্তায় পড়ে থাকে। ঘটনার পর বিশ্বনাথ তাঁতী তাহার বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রী কে ঘরে রেখে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীর নিকট থেকে ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডার ব্যবহৃত আইটেল মোবাইল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, ঘাতক ভিকটিম বিশ্বনাথ তাঁতীর বাক বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রীর সাথে ভিকটিমের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গেল (১৩ মে) রাতে বিশ্বনাথ তাঁতী তার বসতঘরে ভিকটিম চাম্পালালকে নিজের স্ত্রীর সাথে শুয়ে থাকতে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে ভিকটিম মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে মারা যায়।
আজ (১৫ মে) গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গলে দু’দিনব্যাপী তথ্য মেলায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য চেয়ে আবেদন ৮২৬, মাঠেই তথ্য পেলেন ৪৮১ জন

x

৮ ঘন্টার মধ্যেই ফিল্মি স্টাইলে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা গ্রেফতার

আপডেট সময় ০৩:৩১:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০২৩

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ডলুছড়ায় লেবু বাগানের চাম্পালাল মুন্ডা হত্যাকাণ্ডের ৮ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বিশ্বনাথ তাঁতীকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।

গতকাল (১৪ মে) মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানাধীন পাত্রখলা চা বাগানের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাঁড়াসি অভিযান পরিচালনা করে বিশ্বনাথ তাঁতীকে গ্রেফতার করা হয়।

বাগান মালিক পক্ষ জানায়, ভিকটিম চাম্পা লাল মুন্ডা (৩৭) প্রায় ২/৩ বছর যাবৎ ডলুছড়ায় জনৈক দেববর্মার লেবু বাগানে কাজ করে আসছে। ঘাতক বিশ্বনাথ তাঁতীও ২ মাস যাবত এই বাগানে কাজ করে আসছিল।

ভিকটিম চাম্পা লাল মুন্ডা প্রতিদিন ভোর বেলা বাগানের লেবু বিক্রির জন্য ঠেলাগাড়ি করে শ্রীমঙ্গলে বাজারে নিয়ে যেত। গত (১৪ মে) ভোর বেলা ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা বাজারে না আসার কারনে জনৈক জয় কুমার দেববর্মা চাম্পালাল মুন্ডার মোবাইলে ফোন দেয়। ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা ফোন রিসিভ না করার কারণে লেবু বাগান মালিক জনক দেববর্মাসহ তার লোকজন বাগানের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে (১৪ মে) সকাল অনুমান সাড়ে ৬ ঘটিকার সময় লেবু বাগানের ভিতরে মাটির রাস্তায় গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় চাম্পালাল মুন্ডাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষনিক লেবু বাগান মালিক জনক দেববর্মাসহ তার লোকজন চাম্পালাল মুন্ডাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার পূর্বক চিকিৎসার জন্য শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (১৪ মে) সকাল সাড়ে ৮ ঘটিকার সময় চাম্পালাল মুন্ডা মৃত্যুবরণ করে।

এই ঘটনার সংবাদ পেয়ে মাননীয় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া মহোদয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব সুদর্শন কুমার রায় ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহিদুল হক মুন্সী এবং অফিসার ইনচার্জ, শ্রীমঙ্গল থানার সার্বিক দিক-নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই/রাকিবুল হাছান, এসআই/মো. রফিকুল ইসলাম, এসআই তীথংকর দাস এবং এসআই মো. জিয়াউর রহমানসহ একটি চৌকস দল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।

আটককৃত মূল হোতা

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ দ্রুত শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত দেহ ময়না তদন্তের নিমিত্তে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

ঘটনার দিনই পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মোঃ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে চৌকস দলটি ডলুছড়া লেবুর বাগানে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য যান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বাগানের আরেক শ্রমিক বিশ্বনাথ তাঁতীকে লেবু বাগানে পাওয়া না যাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে বিশ্বনাথ তাঁতীর বসত বাড়ীতে গেলে তার উঠানের বিভিন্ন জায়গায় রক্তের দাগ এবং তার বসত বাড়ীর সামনের রাস্তায়ও রক্তের দাগ দেখতে পায় পুলিশ । পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কমলগঞ্জ থানাধীন পাত্রখলা চা বাগানের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাঁড়াসি অভিযান চালিয়ে বিশ্বনাথ তাঁতীকে থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানান যে, গত (১৩ মে) রাত অনুমান সাড়ে ১১ ঘটিকার সময় ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডাকে বসত ঘরে তার স্ত্রীর পাশে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে সে রাগান্বিত হয়ে লাঠি দিয়ে চাম্পালাল মুন্ডার কপালে ও পিঠে একাধিক আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে চাম্পালাল মুন্ডা গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় লেবু বাগানের ভিতরের মাটির রাস্তায় পড়ে থাকে। ঘটনার পর বিশ্বনাথ তাঁতী তাহার বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রী কে ঘরে রেখে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীর নিকট থেকে ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডার ব্যবহৃত আইটেল মোবাইল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, ঘাতক ভিকটিম বিশ্বনাথ তাঁতীর বাক বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রীর সাথে ভিকটিমের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গেল (১৩ মে) রাতে বিশ্বনাথ তাঁতী তার বসতঘরে ভিকটিম চাম্পালালকে নিজের স্ত্রীর সাথে শুয়ে থাকতে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে ভিকটিম মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে মারা যায়।
আজ (১৫ মে) গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।