বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “বিগত সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র জনতা বিতাড়িত করেছে। ইতিহাস বলে, কথিত স্বৈরাচার কখনো ফিরে আসেনি। বাংলাদেশে স্বৈরাচার হাসিনার প্রত্যাবর্তন একটি দিবাস্বপ্ন। বিএনপি এমন কোনো সংগঠন নয়, যাকে ইচ্ছেমতো ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ফেলা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচারী হাসিনা দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে জিয়া পরিবার এবং বিএনপির ওপর চরম জুলুম নির্যাতন চালিয়ে গেছেন। বিনা অপরাধে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাড়ে ৬ বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। বিনা চিকিৎসায় তাঁর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। মহান আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে এবং জনগণের দোয়ায় তিনি এখনো দেশে আছেন। আর হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এটাই নিয়তির খেলা।”
তিনি আরও বলেন, “যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, তারা কি কখনো আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখেছে? গুজরাট, পাঞ্জাব, আজমীর, ত্রিপুরা ও আসামে তাদের কর্মকাণ্ডের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তাদের নিজেদের দায় অনেক বেশি। অথচ তারা অন্যের দোষ খুঁজতে ব্যস্ত। বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। এই মৌলভীবাজার এবং আখাউড়ায় হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করছে। আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশী। আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক।”
তিনি জানান, “আমাদের নেতা তারেক রহমান দলের কর্মীদের মানুষের ভালোবাসা অর্জনের জন্য কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুখে-দুঃখে জনগণের পাশে থাকতে বলেছেন। বিএনপি যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তা দেশের গণতন্ত্র, সুশাসন এবং মানবাধিকারের জন্য সময়োপযোগী একটি নীতিমালা। এই ৩১ দফাকে জনগণের দফায় রূপান্তর করতে পারলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এবং জনগণ তাদের হারানো অধিকার ফিরে পাবে।”
বিএনপির সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপি হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে লড়াই করে যাচ্ছে। বিএনপি দুর্নীতি ও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করবে না। ইস্পাত কঠিন ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা ৩১ দফার আলোকে আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।”
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূনের সভাপতিত্বে এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিসুজ্জামান বায়েছের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই কর্মীসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য ভিপি মিজানুর রহমান মিজান, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু, মোশাররফ হোসেন বাদশা এবং ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
ডা. জাহিদ হোসেন নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান, “সবাইকে শহীদ জিয়ার সৈনিক হতে হবে। কোনো ব্যক্তির লোক না হয়ে, শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে কাজ করতে হবে। বিএনপির নেতৃত্ব তারাই দেবে যারা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।”