‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ ব্যর্থতার জন্য এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় জুলাই আন্দোলনের ছাত্রনেতারা।
রোববার (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে ‘জুলাই পদযাত্রার সকল সংগঠক’ নামীয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভবিষ্যতে কেন্দ্র থেকে প্রীতম দাশের মাধ্যমে কোনো নির্দেশনা এলে শ্রীমঙ্গলের সংগঠকরা তা মানবেন না।
এ সময় শহরে টানানো ‘জুলাই অগ্রনায়কদের’ ছবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন অপমানের ঘটনায় তীব্র নিন্দাও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা শেখ আহমেদ নাইম শামিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৬ জুলাই মৌলভীবাজারে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এরপর এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের শ্রীমঙ্গলে আগমন, চা-শ্রমিক ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ এবং বক্তব্য প্রদানের কথা ছিল। এ উপলক্ষে মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু মৌলভীবাজারে কর্মসূচি শেষে এনসিপি নেতৃবৃন্দকে শ্রীমঙ্গলের একটি রেস্টুরেন্ট ও পরে মহসিন অডিটোরিয়ামের কনফারেন্স রুমে সংবর্ধনার আয়োজন করা হলেও, সেখানে শ্রীমঙ্গল পদযাত্রার কোনো সংগঠককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এদিকে, শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় হাজারো মানুষ নেতৃবৃন্দের আগমনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা সরাসরি কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে চলে যান, যা ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করে।
প্রীতম দাশকে এ বিষয়ে জানালে তিনি বলেন, “শ্রীমঙ্গলে কোনো পদযাত্রা হবে না।” শত অনুরোধেও মাত্র ১০ মিনিটের বক্তব্যের সুযোগ চাইলে তিনি তাও প্রত্যাখ্যান করেন এবং সংগঠকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
একপর্যায়ে কিছু ক্ষুব্ধ সংগঠক তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে এনসিপির অন্যতম অগ্রনায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ গাড়ি থেকে নেমে চৌমুহনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন এবং পরে শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইমরান আহমেদ, ঈশিতা ঈশা, ইরিন জামান ইপতি, আল আমিন, দেলোয়ার হোসেন, তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ মুক্তবার্তা২৪,কমকে মুঠোফোনে বলেন, “আসলে বিষয়টি খুবই ছোট। ২৬ তারিখে আমরা একাধিক প্রোগ্রাম করেছি। এর মধ্যে একটি প্রোগ্রামে কিছুটা মিসিং হয়েছে। এর পেছনে নানা কারণ ছিল— কিছুটা মিসম্যানেজমেন্ট হয়েছিল, সেই সময় বৃষ্টি ছিল, আমাদের আহ্বায়কও বেশ অসুস্থ ছিলেন। এছাড়াও আমাদের যেসব কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন, তাদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সব কিছু শৃঙ্খলায় রাখা সম্ভব হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমাদের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বক্তব্য দেওয়ার জন্য জনসমক্ষে উপস্থিত হলেও, তখন জনসমাবেশের ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করা সম্ভব হয়নি। ফলে বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। ওই দিন আরও ৩-৪টি প্রোগ্রাম ছিল। এর মধ্যে এই একটি প্রোগ্রামে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে।”
প্রীতম দাশ বলেন, “তবে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক সম্মেলন করা কিংবা এটিকে ট্রল নিউজ বানানো কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। যারা এই সাংবাদিক সম্মেলন করেছে, তারা সবাই আমার জুনিয়র। তাদের মধ্যে হয়তো কিছু আবেগ কাজ করেছে, সেই আবেগ থেকেই তারা কষ্ট পেয়ে এমনটা করেছে।”