মৌলভীবাজার ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
Logo হৃদরোগে আক্রান্ত তামিম, হৃদযন্ত্রে বসানো হলো রিং Logo দেশের স্বার্থে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : মহসিন মিয়া মধু Logo অনলাইন পোর্টালের জন্য গণ`মাধ্যম সংস্কার কমিশনের ৭ সুপা`রিশ Logo আ‘লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে গণভোট দেবে ৮০% মানুষ : নাসের রহমান Logo শ্রীমঙ্গলে কালাপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড Logo শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সোলার লাইট স্থাপনার উদ্যোগ জেলা প্রশাসনের Logo মৌলভীবাজারের ধর্ষণের শিকার সাড়ে তিন বছরের শিশুটির পাশে দাঁড়ালেন এম নাসের রহমান Logo সারাদেশে বাড়তে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা Logo আকাশে উড়ল জুলহাস মোল্লার তৈরি বিমান: উদ্ভাবনী চিন্তার জন্য বিএনপি’র সহযোগিতা

আগামী বছর অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিয়ে শেষ হলো বর্ণিল ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’

  • এম এ রকিব
  • আপডেট সময় ০১:০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • 161

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ণিল জীবন ও মেলবন্ধনের ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ ২০২৫ আগামী বছর আবারও শ্রীমঙ্গলে আয়োজন করার ঘোষণা দিয়ে শেষ হয়েছে। পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এ আয়োজন করা হয়। তিন দিনব্যাপী মনোমুগ্ধকর এই উৎসবটি দারুণভাবে উপভোগ করেছেন আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।

শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজন করা মেলবন্ধনের এ আয়োজন রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সমাপ্তি করা হয়। এর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমাপনী বক্তব্যের পর বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক সালেহা বিনতে সিরাজ বলেন, “২০২৬ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে আরও গোছালো এবং বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে এ অঞ্চলের নৃ-গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির এ উৎসব।”

তার আগে গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গলে জমকালো ও বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

হারমোনি ফেস্টিভ্যালে স্থানীয় ২৬টি বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

এছাড়া প্রায় ৫০টি স্টলের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শনীসহ ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খাবারের পসরা বসে মেলায়। ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়।

জানা যায়, উৎসবে সবর জনগোষ্ঠী পত্র সওরা নৃত্য ও চড়ইয়া নৃত্যসহ, খাড়িয়া, রিকিয়াসন, বাড়াইক, কন্দ, রাজবল্লভ, ভূঁইয়া, সাঁওতাল, ওরাও, গড়াইত, মুন্ড, কুর্মী, ভূমিজ, বুনারাজি, লোহার, গঞ্জু, কড়া সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতির নৃত্যসহ খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ডিয়া কেরছা ও মালা পরিধানের মাধ্যমে নাচ-গান, তীর-ধনুক প্রতিযোগিতা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর কাথারক নৃত্য, বেসু নৃত্য, জুম নৃত্য, গ্যারি পূজা, ক্যার পূজা, নক থাপেং মা পূজা, কাদং (রণপা), গারো জনগোষ্ঠীর জুম নৃত্য, আমোয়দেব (পূজা), গ্রীক্কা নাচ (মল্লযুদ্ধ), চাওয়ারী সিক্কা (জামাই-বউ নির্বাচন), চাম্বিল নাচ (বানর নৃত্য), মান্দি নাচ, রে রে গান, সেরেনজিং (প্রেম কাহিনীর গান), মণিপুরী জনগোষ্ঠীর রাসলীলা নৃত্য, পুং চলোম নৃত্য (ঢোল নৃত্য), রাধাকৃষ্ণ নৃত্য এবং সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ধামাইল নৃত্যসহ তাদের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তুলে ধরেন অংশগ্রহণকারীরা।

এছাড়াও খাসিয়া জনগোষ্ঠীর পান নিয়ে লাইভ পরিবেশনা, ত্রিপুরাদের কোমর তাঁত, মণিপুরীদের লাইভ তাঁত, চা ও রাবার প্রসেসিং, কিউ থেনেং (তৈলাক্ত বাঁশে ওঠার প্রতিযোগিতা), সীয়াট বাটু (গুলতি দিয়ে খেলা) এবং কুমারদের লাইভ মাটির জিনিসপত্র প্রস্তুতি উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল।

হারমোনি ফেস্টিভ্যালে শ্রীমঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল জানিয়ে, সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় ট্যুরিজম বোর্ডের এ আয়োজনকে সফল করায় শ্রীমঙ্গলবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন।

জনপ্রিয় সংবাদ

হৃদরোগে আক্রান্ত তামিম, হৃদযন্ত্রে বসানো হলো রিং

x

আগামী বছর অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিয়ে শেষ হলো বর্ণিল ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’

আপডেট সময় ০১:০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ণিল জীবন ও মেলবন্ধনের ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ ২০২৫ আগামী বছর আবারও শ্রীমঙ্গলে আয়োজন করার ঘোষণা দিয়ে শেষ হয়েছে। পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এ আয়োজন করা হয়। তিন দিনব্যাপী মনোমুগ্ধকর এই উৎসবটি দারুণভাবে উপভোগ করেছেন আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।

শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজন করা মেলবন্ধনের এ আয়োজন রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সমাপ্তি করা হয়। এর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমাপনী বক্তব্যের পর বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক সালেহা বিনতে সিরাজ বলেন, “২০২৬ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে আরও গোছালো এবং বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে এ অঞ্চলের নৃ-গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির এ উৎসব।”

তার আগে গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গলে জমকালো ও বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

হারমোনি ফেস্টিভ্যালে স্থানীয় ২৬টি বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

এছাড়া প্রায় ৫০টি স্টলের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শনীসহ ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খাবারের পসরা বসে মেলায়। ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়।

জানা যায়, উৎসবে সবর জনগোষ্ঠী পত্র সওরা নৃত্য ও চড়ইয়া নৃত্যসহ, খাড়িয়া, রিকিয়াসন, বাড়াইক, কন্দ, রাজবল্লভ, ভূঁইয়া, সাঁওতাল, ওরাও, গড়াইত, মুন্ড, কুর্মী, ভূমিজ, বুনারাজি, লোহার, গঞ্জু, কড়া সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতির নৃত্যসহ খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ডিয়া কেরছা ও মালা পরিধানের মাধ্যমে নাচ-গান, তীর-ধনুক প্রতিযোগিতা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর কাথারক নৃত্য, বেসু নৃত্য, জুম নৃত্য, গ্যারি পূজা, ক্যার পূজা, নক থাপেং মা পূজা, কাদং (রণপা), গারো জনগোষ্ঠীর জুম নৃত্য, আমোয়দেব (পূজা), গ্রীক্কা নাচ (মল্লযুদ্ধ), চাওয়ারী সিক্কা (জামাই-বউ নির্বাচন), চাম্বিল নাচ (বানর নৃত্য), মান্দি নাচ, রে রে গান, সেরেনজিং (প্রেম কাহিনীর গান), মণিপুরী জনগোষ্ঠীর রাসলীলা নৃত্য, পুং চলোম নৃত্য (ঢোল নৃত্য), রাধাকৃষ্ণ নৃত্য এবং সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ধামাইল নৃত্যসহ তাদের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তুলে ধরেন অংশগ্রহণকারীরা।

এছাড়াও খাসিয়া জনগোষ্ঠীর পান নিয়ে লাইভ পরিবেশনা, ত্রিপুরাদের কোমর তাঁত, মণিপুরীদের লাইভ তাঁত, চা ও রাবার প্রসেসিং, কিউ থেনেং (তৈলাক্ত বাঁশে ওঠার প্রতিযোগিতা), সীয়াট বাটু (গুলতি দিয়ে খেলা) এবং কুমারদের লাইভ মাটির জিনিসপত্র প্রস্তুতি উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল।

হারমোনি ফেস্টিভ্যালে শ্রীমঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল জানিয়ে, সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় ট্যুরিজম বোর্ডের এ আয়োজনকে সফল করায় শ্রীমঙ্গলবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন।